ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে ঢুকছে অবৈধ মালামাল
ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে ঢুকছে অবৈধ মালামাল : হয়রানির শিকার সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
ভারত থেকে আমদানিকৃত বৈধ পণ্যের আড়ালে বেনাপোল বন্দরে দিয়ে দেশে ঢুকছে কোটি কোটি টাকার অবৈধ বিভিন্ন ধরনের চোরাচালানের মালামাল।
সরকারের মোটা অংকের রাজস্ব ফাঁকি দিতে তৎপর শক্তিশালী সিন্ডিকেট গ্রæপটি দু’দেশের বন্দর এলাকায় শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে।

এদের কারণে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ ব্যবসায়ীরা।
সংশ্লিস্ট একটি সূত্র জানায়, অবৈধ পথে চোরাচালানী পণ্য আনতে না পেরে ওই মহলটি কাজে লাগায় ভারতীয় ট্রাক চালকদের।
সামান্য টাকার বিনিময়ে ভারত থেকে কোটি কোটি টাকার আমদানিকৃত বৈধ পণ্যের সাথে অবৈধ পণ্য উঠিয়ে দেয় ট্রাকে।
অবৈধ ব্যবসাটি পরিচালনার জন্য বেনাপোলের ওপারে পেট্রাপোল বন্দর এবং বনগাঁ এলাকায় গড়ে উঠেছে একাধিক শক্তিশালী গ্রæপ।
বনগাঁ এবং আশপাশের এলাকা বিশেষ করে চাঁদপাড়া, মসলন্দপুর, গোবরডাঙ্গা, গাইঘাটা অঞ্চলের ট্রাক চালক এবং তাদের সহকারীরা এ চক্রের সাথে জড়িত।
আমদানি পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের আগে বনগাঁ কালিতলা পার্কিংয়ে ১৫ থেকে ২০ দিন অবস্থান করে।
পার্কিং এলাকায় নজরদারি না থাকার কারনে বনগাঁ ভিত্তিক গড়ে উঠা চোরাচালান চক্রটি পণ্যবাহী ট্রাক চালকদের সাথে সমঝোতা করে
আমদানিকৃত মালামাল ভর্তি গাড়িতে উঠিয়ে দিচ্ছে শাড়ি, থ্রিপিছ, কসমেটিক্স, ওষুধ, মদ, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল।
ভারতীয় ট্রাকচালকরা বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের পর মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সাথে।
তালায় নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সংবর্ধনা
অবৈধ পণ্যগুলো বন্দরের বিভিন্ন শেডে কৌশলে আনলোড করে রাতের আধারে বন্দর থেকে বের করে নিয়ে যায় চক্রটি।
কিছু ট্রাক ভারত থেকে আসা ট্রাকের পাশে লাগিয়ে আনলোডও করে নেয় চক্রটি। বেনাপোল বন্দর থেকে পণ্য বের করে নেয়ার জন্য এখানেও রয়েছে অন্য একটি চক্র।
ট্রাকভর্তি মালামালের সাথে গোডাউন থেকে বের হচ্ছে এসব চোরাচালানের মাল।
চোরাচালানী এই সিন্ডিকেট নিয়ে আতংকে আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টরা।
গত ২ মাসে একাধিক পণ্যবাহী ট্রাকের মধ্যে অবৈধ চোরাচালানের মালামাল পাওয়ায় বিব্রত কাষ্টমস কতৃর্পক্ষ।
বৈধ পণ্যের সাথে আনা এসব অবৈধ পণ্যের বিষয়ে আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টরা কিছু না জানলেও কাস্টমস কতৃর্পক্ষ ইতোমধ্যে
৫টি সিএন্ডএফ এজেন্টকে দায়ী করে তাদের লাইসেন্স সাময়িকভাবে বাতিল করেছে।
ফলে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস ব্যবসায়ীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তারা এ ধরনের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান।
গত ১৫ এপ্রিল ভারত থেকে শিল্প কলকারখানার কাঁচামাল ভর্তি একটি ভারতীয় ট্রাকে মদ, শাড়ী, থ্রীপিচ, কসমেটিকসসহ বিভিন্ন
পণ্যবোঝাই (ডাবøুউ-বি-২০-১৮৯০ নাম্বারের) ট্রাকটি আটক করে অবৈধ পণ্যের জন্য সিএন্ডএফ এজেন্টকে দায়ী করা হয়।
এছাড়াও ভারতীয় ট্রাক চালকরা বাংলাদেশ থেকে সোনা, ডলার, ইলিশ মাছ, পাসপোর্ট নিয়ে যায় ইতোমধ্যে
ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে আটকও হয়েছে একাধিকবার।
রাজশাহীতে ফেন্সিডিলসহ ৩ জন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী আটক
গত ২৭ জুলাই এয়ার এন্টারপ্রাইজ নামে একজন আমদানিকারক ভারত থেকে ৩০০ কার্টন বিøন্ডার আমদানি করেন।
সিন্ডিকেটের সদস্যরা ওপার থেকে ভারতীয় ট্রাকে (ডাবøউ ই-বি-৮৭-১০৮৮) ২৭ কার্টন শাড়ি, থ্রি-পিস, ওষুধ ও প্রসাধন সামগ্রী তুলে দেয়।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ট্রাকটি বন্দরে ঢোকার সময় আটক করে।
ট্রাকটিতে তল্লাশি চালিয়ে ২৭ কার্টন অবৈধ পণ্য জব্দ করা হয়।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আনোয়ার এন্টারপ্রাইজের লাইসেন্সটি সাময়িক বাতিল করেন।
যদিও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল না। প্রতিটি আটকের ঘটনায় ভারতীয় ট্রাক রেখে কৌশলে পালিয়ে যায় ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভার ও হেলপাররা।
ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র বেনাপোল বন্দরকে ঘিরে চোরাচালান ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদের কারণে হয়রানির শিকার হচ্ছে সাধারণ আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ীরা।
আমরা এই চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনকে জানিয়েছি।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, সিন্ডিকেটের সাথে আমাদের কোন কর্মকর্তা জড়িত কিনা আমার জানা নেই।
তবে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। বেনাপোল কাস্টম কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান,
সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বৈধ মালের সাথে যেসব অবৈধ মালামাল আমরা আটক করেছি, তা নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
সিন্ডিকেটের কথা আমরা শুনেছি। ভারতীয় কাস্টমস এর সাথে মিটিং করে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে নেয়া হবে।

প্রতিনিধির তালিকা দেখতে ভিজিট করুন shopnotelevision.wix.com/reporters সাইটে।




Pingback: বেনাপোলে ট্রাকের মধ্যে মারা গেল ট্রাক চালক - দ্যা বাংলা ওয়াল
Pingback: রাজশাহীতে বিএডিসির বীজ ডিলার নিয়োগে অনিয়ম - দ্যা বাংলা ওয়াল