শিক্ষাবিদ ফখরুল ইসলামের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী
শিক্ষাবিদ ফখরুল ইসলামের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী আজ।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, আলোকিত মানুষ গড়ার প্রকৃত কারিগর, পাবনা সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ,
পাবনার বরেণ্য সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যক্ষ মো. ফখরুল ইসলাম ২০২০ সালে ২ ডিসেম্বরে ভোর আনুমানিক ৫ টার দিকে
ঢাকার একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন৷ মৃত্যকালে তার বয়স হয়েছিলো ৯০ বছর৷
প্রফেসর মো. ফখরুল ইসলাম ১৯৩০ সালের ৫ জুলাই পাবনা সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের আরিফপুরস্থ বলরামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
পিতা বেশারত আলী ও মাতা নূরুন্নাহার।
প্রফেসর মো. ফখরুল ইসলাম পাবনা জেলা স্কুল থেকে ১৯৪৭ সালে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক এবং তৎকালীন পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ (বর্তমানে সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ)
থেকে ১৯৪৯ সালে আইএ পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে ১৯৫২ সালে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৫৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
এডওয়ার্ড কলেজে অধ্যয়নকালে ১৯৪৭ সালে কলেজ ছাত্র সংসদের ম্যাগাজিন সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৪৮ সালে কলেজের বার্ষিক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ৫টি বিষয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ওয়েস্ট হাউসের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এবং
হলের ভলিবল ও একোয়াটিকস বিভাগের ক্যাপ্টেন নির্বাচিত হন। ১৯৫২ সালের ভাষা-আন্দোলনে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
কুষ্টিয়া জেলা আনসারের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন
ভাষা সৈনিক অধ্যক্ষ জনাব মো. ফখরুল ইসলাম ১৯৫৪ সালের ২৪ জুলাই পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অর্থনীতি বিভাগে
প্রভাষক হিসেবে যোগ দিয়ে প্রায় সুদীর্ঘ ২২ বছর দায়িত্ব পালন করেন।
পরে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মজীবনে তিনি যশোর মাইকেল মধুসূদন কলেজে দায়িত্ব পালন করেন৷
১৯৭৮ সালে পুনরায় তিনি সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে যোগদান করেন এবং ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত তিনি সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োজিত থাকেন৷
১৯৮৪ সাল থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
অবসর গ্রহণের পর তিনি পাবনা শহীদ আমিন উদ্দিন আইন কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন প্রায় তিন বছর।
প্রফেসর ইসলাম শিক্ষা ও কর্মজীবনের অধিকাংশ সময় পাবনায় অতিবাহিত করার কারণে পাবনার বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক,
শিক্ষা ও ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে বরাবরই নিবিড়ভাবে জড়িত ছিলেন। এডওয়ার্ড কলেজে কর্মরত অবস্থায় তিনি ভর্তি ও পুওর ফান্ড কমিটির আহ্বায়ক,
কলেজ ছাত্র সংসদের সাংস্কৃতিক কমিটির উপদেষ্টা, কলেজ রেভিনিউ কমিটির সদস্য ছিলেন।
রাজশাহী রেঞ্জাধীন আন্ত:জেলা কাবাডি চ্যাম্পিয়ন
পাবনা জেলা রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ ও পাবনা জেলা উন্নয়ন কমিটির সভাপতি, পাবনা কলেজ গঠন কমিটির আহ্বায়ক,
জেলখানা পরিদর্শক ছিলেন তিনি। তিনি পাবনা ফাউন্ডেশন, সদর হাসপাতাল কমিটি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, পাবনা জেলা ক্রীড়া সংস্থা,
পাবনা কলেজ পরিচালনা পর্ষদ, পাবনা টাউন গার্লস স্কুল পরিচালনা পর্ষদ, পাবনা জেলা স্কুল পরিচালনা পর্ষদ,
পাবনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ-এর সদস্য ছিলেন। এছাড়া তিনি পাবনার সরকারি-বেসরকারি
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
শিক্ষাবিদ ফখরুল ইসলামের অবসর গ্রহণের পর তিনি পাবনাস্থ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তাঁর সঠিক নেতৃত্বের কারণে পাবনা জেলা সমিতি রাজশাহী বিভাগের মধ্যে শ্রেষ্ঠ সমিতি হিসেবে স্বীকৃতি পায় এবং কেন্দ্রীয় সমিতি কর্তৃক পুরস্কৃত হয়।
তিনি পাবনা ও কেন্দ্রীয় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির আজীবন সদস্য।
প্রফেসর মো. ফখরুল ইসলামের সহধর্মিণী ফরহাত ইসলাম। তাঁদের দুই পুত্র ও দুই কন্যা।
বড় ছেলে মো. ফয়জুল ইসলাম সুমন ও ছোট ছেলে মো. ফাহিমুল ইসলাম শোভন ১৩-তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে
নির্বাচিত হয়ে বর্তমানে সরকারের যুগ্মসচিব হিসেবে কর্মরত আছেন। বড় মেয়ে ডা. ফারহানা ইসলাম নীলা মহাখালি ক্যানসার ইনস্টিটিউট ও
হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক এবং ছোটো মেয়ে ফাররিদা ইসলাম নীতু বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবাসী জীবন অতিবাহিত করছেন।

প্রতিনিধির তালিকা দেখতে ভিজিট করুন shopnotelevision.wix.com/reporters সাইটে।



